সর্বশেষ সংবাদ
ইসরায়েলের টানা অবরোধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। খাবার, ওষুধ ও জ্বালানির প্রবেশ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখানে দিন পার করছেন প্রায় ১২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ ভয়াবহ ক্ষুধা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে গাজার প্রশাসন এটিকে ‘আধুনিক যুগের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক অবরোধ’ বলে আখ্যা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এই পরিস্থিতিকে বলা হচ্ছে ‘লজ্জাজনক নীরবতা’।
এই চরম সংকট শুরু হয়েছে গত ১০৩ দিন ধরে চলা ইসরায়েলি অবরোধের ফলে। গাজা প্রশাসনের মতে, ইসরায়েল সব ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়ার কারণে খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির প্রবেশ একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। এতে শত শত মানুষ ‘দুর্বিষহ ক্ষুধার্ত অবস্থায়’ জীবন পার করছেন এবং প্রাণ হারাচ্ছেন। সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা—যাদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার। খাদ্য সংকট ও পুষ্টিহীনতায় এখন পর্যন্ত ৬৭ জন শিশু মারা গেছে, এবং প্রতিদিন এই সংখ্যা বাড়ছে।
প্রশাসনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা শুধু গত তিন দিনেই বহু মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্ত করেছি, যেগুলো সরাসরি খাদ্য ও ওষুধের ঘাটতির কারণে ঘটেছে।” এতে আরও বলা হয়, “এই পরিস্থিতি কেবল মানবিক বিপর্যয় নয়, বরং এটি একটি নির্মম সমষ্টিগত শাস্তি।” বিশ্বজুড়ে যেসব সংস্থা মানবাধিকারের কথা বলে, তাদের কার্যকর ভূমিকা নেই বলেও তীব্র হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে।
এই সময় গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহ শহরে ইসরায়েলের পরিকল্পিত ‘ত্রাণ তাবু শহর’ নিয়েও উদ্বেগ জানানো হয়েছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের লেবার পার্টির ৫৯ জন এমপি এক চিঠিতে জানিয়েছেন, ত্রাণের অজুহাতে নতুন বসতি তৈরি করা হলে তা হবে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জোরপূর্বক স্থানান্তর ও জাতিগত নিধনের আরেক অধ্যায়। তাঁরা ইসরায়েলকে এই পরিকল্পনা বাতিল করতে আহ্বান জানান এবং ব্রিটেন সরকারকে দ্রুত ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার অনুরোধ জানান।
চিঠিটি ‘লেবার ফ্রেন্ডস অব ফিলিস্তিন অ্যান্ড দ্য মিডল ইস্ট’ নামক সংগঠনের উদ্যোগে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি-র কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে মধ্যপন্থি ও বামঘরানার এমপিরা সই করেছেন এবং বলেন, “এই অবস্থায় নীরবতা শুধু অমানবিক নয়, অপরাধস্বরূপ।” তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা