ঢাকা   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Image Not Found!

সর্বশেষ সংবাদ

  চাঁদাবাজের তালিকা হচ্ছে, দুই-তিনদিনের মধ্যে গ্রেপ্তার শুরু: ডিএমপি কমিশনার (জাতীয়)        হাসান আরিফের প্রথম জানাজায় ড. ইউনূসসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা (জাতীয়)        বিজয় দিবসে লাল-সবুজ জার্সিতে জেলা প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশনের মিলনমেলা (জাতীয়)        মোদির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা (জাতীয়)        জেলা প্রশাসকের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করলেন সম্পাদক শামসুল আলম খান (ময়মনসিংহ)        জাতি চিরদিন মুক্তিযোদ্ধাদেরকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে --বিভাগীয় কমিশনার (জাতীয়)        এবারও বিজয় দিবসে ফ্যাসিস্ট রাই ক্রোড়পত্র পেলেন , নতুন বাংলাদেশের সফলতা না ব্যর্থতা এ দায় কার? মাননীয় তথ্য উপদেষ্টা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন কি? (জাতীয়)        ময়মনসিংহে ট্রেন লাইনচ্যুত, ১২ ঘণ্টায়ও শেষ হয়নি উদ্ধার কাজ (ময়মনসিংহ)        রাজধানীতে ছাত্রশিবিরের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা (জাতীয়)        আওয়ামী লীগের কর্মসূচি, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে অভিযানের সিদ্ধান্ত : উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ (জাতীয়)      

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে পাকিস্তানের নাটকীয় জয়

Logo Missing
প্রকাশিত: 07:27:02 am, 2023-08-25 |  দেখা হয়েছে: 1 বার।

পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের খুব কাছে গিয়েও এবারও পেরে উঠল না আফগানিস্তান। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় আফগানদের হারিয়ে সিরিজ জিতে নিল বাবর আজমের দল।

 

প্রথম ম্যাচের ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটিয়ে পাকিস্তানকে ৩০১ রানের কঠিন লক্ষ্য দিয়েছিল আফগানিস্তান। শ্রীলঙ্কার হাম্বানতোতায় মাহেন্দ্র রাজাপাক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার পাকিস্তান সেই রান টপকে যায় ১ বল আর ১ উইকেট হাতে রেখে।

শেষ ওভারে দরকার ছিল ১১ রান। নন স্ট্রাইক প্রান্তে ছিলেন শাদব খান। বল ডেভিভারি দেওয়ার আগ মুহূর্তে শাদব উইকেট ছেড়ে গেছেন দেখে রান আউট করে দেন ফজলুলহক ফারুকি। হতবাক হয়ে মাঠ ছাড়েন শাদব।

ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকান নাসিম। পরের বলে সিঙ্গেল। হারিস বাউন্ডারিতে বল পাঠিয়ে নেন ৩ রান। শেষ ২ বলে যখন ৩ রানের দরকার তখন আউটসাইড এজে বাউন্ডারি পাওয়ার পর উল্লাসে মাতেন নাসিম।

কঠিন সময়ে ৩৫ বলে ৪৮ রানের ইনিংস খেলায় ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে শাদবের হাতে। ৫ বলে মহামূল্যবার ১০ রান আসে নাসিমের ব্যাট থেকে। এমন নাটকীয়তায় ঢাকা পড়ে যায় ইমাম-উল-হকের ৯১ ও বাবর আজমের ৫৩ রানের ইনিংস।

অথচ ম্যাচের গল্পটা রচিত হতে পারত রহমানউল্লাহ গুরবাজকে কেন্দ্র করে। ১৫১ বলে ১৫১ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেছেন গুরবাজ। বিশ্বের প্রথম কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে দেড়শ ছোঁয়া ইনিংস খেললেন তিনি। ২০০৫ সালে ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনির ১৪৮ ছিল আগের সেরা। সেটি ছিল ধোনির প্রথম সেঞ্চুরি।

আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জদরান করেন ১০১ বলে ৮০ রান। দুজনের ওপেনিং জুটি থেকে আসে ২৪৪ বলে ২২৭ রান। ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে যে কোনো দলের দ্বিতীয় সেরা উদ্বোধনী জুটি এটি। ২০১৭ সালে অ্যাডিলেইডে অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেডের উদ্বোধনী জুটির ২৮৪ রান রেকর্ড।

মাস দুয়েক আগেও আফগানিস্তানের ছিল না কোনো দুইশ রানের উদ্বোধনী জুটি, চার ম্যাচের মধ্যে তা হয়ে গেল দুটি। গত মাসের শুরুর দিকে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে গুরবাজ ও ইব্রাহিম মিলেই গড়েছিলেন ২৫৬ রানের জুটি, যে কোনো উইকেটেই এটি আফগানিস্তানের রেকর্ড জুটি। তারপরই এবারের ২২৭। ওই ম্যাচে ১২৫ বলে ১৪৫ রানের ইনিংস খেলা গুরবাজ এবার ছাড়িয়ে গেলেন সেটি।

প্রথম আফগান ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়ে ১৫১ বলে ১৪ চার ও ৩ ছক্কায় ১৫১ রান করেন তিনি। আফগানিস্তানের হয়ে গুরবাজের চেয়ে বড় ইনিংস আছে আর একটিই, গত বছর পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইব্রাহিম জাদরানের ১৬২।

ওয়ানডেতে গুরবাজের ৫টি সেঞ্চুরি হয়ে গেল ২৩ ইনিংসেই। তার চেয়ে কম ইনিংসে ক্যারিয়ারে প্রথম পাঁচ সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন কেবল দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্টন ডি কক ও পাকিস্তানের ইমাম-উল-হক, দুজনেরই লেগেছে ১৯ ইনিংস।

পাকিস্তানের বিপক্ষে এই সংস্করণে ছয় ম্যাচে এই প্রথম তিনশ ছুঁতে পারে আফগানিস্তান। ২০১৮ এশিয়া কাপে আবু ধাবিতে ৬ উইকেটে ২৫৭ ছিল তাদের আগের সর্বোচ্চ। দুই ইনিংস মিলিয়ে এই দুই দলের এটিই সর্বোচ্চ রানের ম্যাচ (৬০২)।

নাসিম শাহয়ের গতি, শাহিন শাহ আফ্রিদির সুইং কিংবা হারিস রউফের লাইন লেন্থ- কোনো কিছুই টলাতে পারছিল না আফগানিস্তানের ওপেনিং জুটিকে। গুরবাজ যখন ৪২ রানে, রউফের এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নিলে হয়তো ফল ভিন্ন হতে পারত। কিন্তু একটি রিভিউ বাকি থাকায় রিস্ক নেননি বাবর। ৭২ বলে ফিফটি করা গুরবাজ শতক পূর্ণ করেন ১২২ বলে। আফ্রিদির বল ডিপ থার্ড ম্যানে পাঠিয়ে শতক পূর্ণ করেন তিনি।

ইব্রাহিমের রান যখন ৬, হারিসের বলে কট বিহাইন্ডের আবেদন করে পাকিস্তান। আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় রিভিউ নেন বাবর। কিন্তু সফল হননি। ৭১ বলে ফিফটি করেন ইব্রাহিম। ২১.৫ ওভারে আসে দলীয় শতরান। দলীয় ৩০.১ ওভারে দেড়শ স্পর্শ করে আফগানরা। আর ২০০ পূর্ণ হয় ২২২ বলে। ওসামা মিরের বলে লং অফে ক্যাচ দিয়ে ওপেনিং জুটি বিচ্ছিন্ন করেন ওসামা মির। গুরবাজকে উইকেটের পিছনে ক্যাচ বানান আফ্রিদি। উইকেট থাকার পরও শেষ দিকে সেভাবে ঝড় তুলতে পারেননি মোহাম্মাদ নবি-রশিদ খানরা।

১০ ওভারের ৫৮ রানে ২ উইকেট নেন আফ্রিদি। গত ম্যাচে ১৮ রানে ৫ উইকেট নেওয়া হারিস রউফ ৭ ওভারে ৪৮ রানে দিয়েও এবার উইকেট পাননি।

এদিন দলে দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে আফগানিস্তান। রহমত শাহ ও প্রথম ম্যাচে সাইড স্ট্রেইন চোটে ব্যাটিং থেকে রিটায়ার্ড হার্টে যাওয়া আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বদলে দলে জায়গা পান রিয়াজ হাসান ও শহিদুল্লাহ কামাল।

রান তাড়ায় ৫২ রানের উদ্বোধনী জুটিতে শুরুটা ভালোই করে পাকিস্তান। ৩৪ বলে ৩০ রান করা ফখর জামানকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন ফজলহক ফারুকি। এরপর সবচেয়ে বড় জুটির দেখা পায় দলটি। ফারুকিই ভাঙেন বাবর-ইমামের ১১৮ রানের জুটি। ৬৬ বলে ৬ চারে ৫৩ রান করেন অধিনায়ক। স্কোর কার্ডে ৬ রান যোগ হতেই ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান মোহাম্মাদ রিজওয়ান। ম্যাচে ফেরে আফগানিস্তান।

আগা সালমানকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি নবি। উসামা মিরকে তো রানের খাতাই খুলতে দেননি এই স্পিনার। সেঞ্চুরি থেকে ৯ রান দূরে থাকতে পরপরই বিদায় নেন ইমামও। ইমামের ১০৫ বলে ৯১ রানের ইনিংসে চারের মার চারটি। ৩ উইকেটে ২০৮ থেকে মুহূর্তেই ৬ উইকেটে ২১১ হয়ে যায়।

এরপর ইফতিখার আহমেদকে নিয়ে চেষ্টা চালান শাদব খান। ইফতিখার ফিরে গেলে শাদবের জন্য কাজটা কঠিন হয়ে পড়ে। ১২ বলে দরকার ছিল ২৭ রান। আব্দুল রহমানের ওভারে ১৬ রান নেন শাদব। এরপর সেই শেষ ওভারের নাটকীয়তা। একই দল নিয়ে খেলছে পাকিস্তান। দুই দিন আগে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে একই মাঠে আফগানদের ৫৯ রানে গুটিয়ে ১৪২ রানে ম্যাচ জিতেছিল বাবর আজমের দল।

শনিবার কলম্বোয় সিরিজের শেষ ম্যাচে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর জন্য লড়বে আফগানিস্তান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান: ৫০ ওভারে ৩০০/৫ (গুরবাজ ১৫১, ইব্রাহিম ৮০, নবি ২৯, রশিদ ২, শহিদুল্লাহ ১, শাহিদি ১৫*, রহমান ৪*; আফ্রিদি ১০-০-৫৮-২, নাসিম ৯-০-৪৫-১, রউফ ৭-০-৪৮-০, শাদাব ১০-০-৫৩-০, উসামা ১০-০-৬১-১, ইফতিখার ৪-০-২৪-০)।

পাকিস্তান: ৪৯.৫ ওভারে ৩০২ (ফখর ৩০, ইমাম ৯১, বাবর ৫৩, রিজওয়ান ২, সালমান ১৪, উসমান ০, ইফতিখার ১৭, শাদব ৪৮, আফ্রিদি ৪, নাসিম ১০*, রউফ ৩*;ফারুকি ৯.৫-০-৬৯-৩, মুজিব ১০-০-৪৫-১, রহমান ১০-০-৮৩-১, নবি ১০-০-৪৬-২, রশিদ ১০-০-৫৩-০)।

ফল: পাকিস্তান ১ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: শাদব খান (পাকিস্তান)।

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে পাকিস্তান ২-০তে এগিয়ে।